1. [email protected] : CbCvVcgr :
  2. [email protected] : facfltd :
  3. [email protected] : FormanchYtv :
গ্রাফিতি আঁকায় বাধার প্রতিবাদ ও ৫ দফা দাবিতে আদিবাসীদের বিক্ষোভ - Chattogram Voice
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ০১:৪২ অপরাহ্ন

গ্রাফিতি আঁকায় বাধার প্রতিবাদ ও ৫ দফা দাবিতে আদিবাসীদের বিক্ষোভ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪
  • ২৮২ Time View

 

রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম শহরের চেরাগীর পাহাড় মোড় এলাকায় ‘আদিবাসী ছাত্র জনতা, চট্টগ্রাম’ শীর্ষক ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

‘আদিবাসী ছাত্র জনতা, চট্টগ্রাম’ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রাফিতি আঁকতে সেনা-সেটেলার কর্তৃক বাধা দেওয়ার প্রতিবাদ ও আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া সহ অন্যান্য দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে স্বাধীনতা উদযাপনের অংশ হিসেবে ছাত্র-জনতার স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গ্রাফিতি কার্যক্রম চলমান। তারই সূত্র ধরে পাহাড়েও স্বাধীনতাকামী ছাত্র-জনতা গ্রাফিতি অঙ্কনের উদ্যোগ নেয়। পাহাড়ি আদিবাসীরা এই গ্রাফিতি আঁকতে গিয়ে চট্টগ্রাম শহরে সাধারণ বাঙালি ছাত্র কর্তৃক এবং খাগড়াছড়ি শহর ও বান্দরবানের লামায় সেনাবাহিনী কর্তৃক বাধার সম্মুখীন হয়েছে বলে জানান তাদের বিক্ষোভে।এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল সেই বাধার প্রতিবাদে আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে স্বাগত বক্তব্যে পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ সর্বোপরি সর্বস্তরের আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে এক হওয়ার আহ্বান জানান সালেন চাকমা।

জনিমং মারমা বলেন, ‘আমাদের আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই। মনে রাখবেন আদিবাসীদের যত দমিয়ে রাখা হবে, তত আদিবাসীরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।’

ঝুমকা চাকমা বলেন, ‘উন্নয়নের নামে পাহাড়কে নষ্ট করা হোক—এটা আমরা চাই না। কারণ এটার ভুক্তভোগী সরাসরি পাহাড়ের সাধারণ মানুষ। আর দেশ কি শুধু সমতলের জন্য স্বাধীন হয়েছে? পাহাড়ের স্বাধীনতা কি আমরা পাব না?’

শাওনি মারমা বলেন, আমদের আদিবাসী প্রতিনিধি যেন আমাদের সাধারণ আদিবাসীদের সুখ-দুঃখের কথা তুলে ধরেন। সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা গ্রাফিতি আঁকছে। কিন্তু শুধুমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের কেন বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে?

নিউস্টাইন চাকমা বলেন, আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের চলমান যে সেনাশাসন ও তার পরিপ্রেক্ষিতে সেনা মদদপুষ্ট সেটেলার কর্তৃক আদিবাসী জুমদের ভূমি বেদখল ও চাবাই মগসহ কল্পনা চাকমার অপহরণ এবং বিভিন্ন
জাতিসত্তার নারীদের ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাই। তিনি আদিবাসীদের ভূমি অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান এবং স্ব স্ব জাতিসত্তার ভাষা ও বর্ণমালার সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করেন।

ষষ্ঠমী চাকমা বলেন, ‘কেন নিজের জায়গাতেই আমাদের আইডিকার্ড দেখিয়ে চলাফেরা করতে হয়? সমতলে যেহেতু সেনাশাসন নেই, পাহাড়ে কেন থাকবে?’

পহেলা চাকমা বলেন, আমাদের পাহাড়ে উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখল হচ্ছে, আপনারা বাঙালি ভাইয়েরা ফিলিস্তিনের খবর রাখেন, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের খবর রাখেন না। সেটেলার ও সেনাবাহিনী কর্তৃক আদিবাসী নারীকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। আমাদের মিডিয়া কখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের আসল দুঃখগাথা প্রকাশ করে না। ফলে বাঙালি ও আদিবাসীদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে যায়। সুতরাং আমরা এই ফিল্টারিং মিডিয়া মানি না।

সমাবেশ শেষে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতার পক্ষ থেকে একটি মিছিল চেরাগীর পাহাড় মোড় থেকে শুরু হয়ে জামাল খান রোড দিয়ে জামাল খান সার্কেল প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জামাল খান রোড দিয়ে চেরাগীর পাহাড় মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে ‘আমি কে? তুমি কে? বাংলাদেশি, বাংলাদেশি’, ‘ফিরিয়ে দাও, দিতে হবে, আদিবাসীদের ভূমি অধিকার’, ‘এক দেশে দুই নীতি, মানি না, মানব না’, ‘পাহাড় আর সমতলে, লড়াই হবে সমানতালে’, ‘আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে হবে, দিতে হবে’, ‘নামমাত্র কোটা, চাই না চাই না’, ‘উন্নয়নের নামে ভূমি দখল বন্ধ কর, করতে হবে’, ‘পাহাড় থেকে সেনা শাসন, তুলে নাও, নিতে হবে’, ‘গ্রাফিতি অঙ্কনে বাধা কেন, প্রশাসনের জবাব চাই’, ‘তোমার দাবি আমার দাবি, একতা একতা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা পাঁচ দাবি হলো—

১. পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি ও সমতলের আদিবাসীদের প্রতি সব ধরনের অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্য অবসান করা।

২. পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন ও অপারেশন উত্তরণ প্রত্যাহার করা।

৩. সংবিধানের ‘ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী’ টার্মটি বাতিল করে পাহাড়ি ও সমতলের আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া।

৪. পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতলের আদিবাসীদের প্রথাগত ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা এবং দখলকৃত ভূমি ফিরিয়ে দেওয়া।

৫. পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৯০০ সালের শাসনবিধি বলবৎ রাখা।

এ ছাড়া, বাংলাদেশের সর্বস্তরের আদিবাসী, জনসাধারণ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে সামগ্রিক ঐক্যের জন্যে আহ্বান করা হয় এই কর্মসূচি থেকে। সমাবেশ থেকে সবাইকে একতাবদ্ধ থাকার ও নতুন প্রজন্মকে নিজেদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের আহ্বানে যেকোনো মুহূর্তে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021
Theme Customized By LiveTV