নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন এলাকার মাসুদুল আলম নামে এক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভিটা বাড়ী ছেড়ে আতংকে দিন কাটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে। দুশ্চিন্তা আর ভয় তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও জানান তিনি।
২৯ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে একই এলাকার খোরশেদ, লোকমান, আবছার ও আকতার নামের কথিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে সে আতংকে দিন কাটাচ্ছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগের কথা জানান।
ভুক্তভোগী জানান, আমি রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা হই। আমাদের এলাকার খোরশেদ,লোকমান, আবছার ও আকতারসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ২০১৩ সালে বিএনপির পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে আমাকে অহেতুক মারধর করে গুরুতর জখম করে। শুধু তারা জখম করে ক্ষান্ত হয়নি, সে সময় খোরশেদ এর কিশোর গ্যাং সদস্য ফারুক,মিজান,জাবিদ ও শাহিদ মিলে রাতের আঁধারে ডাকাতি করে আমার দোকান থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। বিষয়টি আমি স্থানীয় প্রতিনিধিকে অভিহিত করলে তারা আমার সাথে শত্রুতা শুরু করে।
এ শত্রুতার জেরে, তারা দীর্ঘ ১১ বছর ধরে আমাকে জালাতন করে আসছে। নানান অজুহাত দেখিয়ে তারা আমাকে বিভিন্ন সময় মারধর থেকে শুরু করে বিভিন্ন অংকের চাঁদা দাবী করে আসছে। সেকান্দর, মতি ও জসিমসহ আরো ১০ থেকে ১২ জন কিশোর গ্যাং সদস্য মিলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমার কাছ থেকে নগদ ৩২ হাজার টাকা, একটি ফনিক্স সাইকেল, একটি এন্ড্রয়েড সেট ছিনিয়ে নেয়। এবং প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করলে আমি কোন রকম পালিয়ে জানে বেচে যাই।
এরপর থেকে তারা ও আরো কিশোর গ্যাং সদস্য আবির, শাহেদ, আরিফ মিলে ২৬ হাজার টাকা দামের ফ্রিজ ও আমার চট্টগ্রাম -থ-১২-৩৬৬৮ নাম্বারের সিএনজি আটকে রেখে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে যায়। সর্বশেষ সেকান্দর আমাকে এক নারী দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। আমার ভগ্নিপতি মিলে একটি জায়গায় ক্রয় করতে গেলে সেখানেও খোরশেদ ও সেকান্দর আমার কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সেকান্দর, জসিমসহ আরো ১০ থেকে ১২ জন কিশোর গ্যাং মিলে আমাকে মারধর করে। এবং খোরশেদ, আকতার মিলে আমার ভাড়া বাসায় ঢুকে আমাকে মারধর করে সাড়ে তিন লাখ টাকার লাইফ ইন্সুইরেন্স এর চেক, গাড়ির মালিকানার স্ট্যাম্প ও আমার পাসপোর্টসহ নগদ আট হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
তিনি আরো জানান, তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এলাকায় খুনখারাপি থেকে শুরু করে জমি দখল, ডাকাতি, জুয়া, দেহব্যবসাসহ নানান অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে। তারা এলাকার ত্রাস। এক থেকে দেড়শত জনের একটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ আছে তাদের। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলে না। তাদের আতংকে আমিসহ আরো অনেকে এলাকা ছাড়া হয়ে আছে।
আজ আমি এই সন্ত্রাসীদের ভয়ে গ্রামে-শহরে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। উদবাস্তু হয়ে দিন পার করছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতেও ভয় পাচ্ছি। কারণ তারা আমাকে জানে মেরে ফেলবে। আমি তাদের ভয়ে যে কোন মুহুর্তে আত্মহত্যা করতে পারি। আমি কারো সাহায্য না পেয়ে গণমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছি। আমি রাউজানের স্থানীয় প্রতিনিধি, প্রশাসনসহ দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার জানের নিরাপত্তা চাচ্ছি। এবং এ সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।
Leave a Reply