নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিএ) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুসারে এ খাতের নিরাপত্তা পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, আমরা ব্যয়বহুল হলেও আমাদের শিপব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোকে গ্রিন ইয়ার্ডে পরিণত করার দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এ ছাড়া শ্রমিকদের সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে।
জাহাজভাঙ্গা শিল্পের শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা এনজিও ওশির নির্বাহী পরিচালক রিপন চৌধুরী বলেন, সীতাকুণ্ডে পাঠানো এসব জাহাজের বেশিরভাগে অ্যাসবেস্টস থাকে। যার ফলে কাজ করা শ্রমিকরা ফুসফুসের ক্যান্সারসহ নানা জটিলতায় ভুগেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের খালি হাতে কাজ করতে বাধ্য করা হয় বলেও দাবি এনজিওটির।
তিনি বলেন, ওশি ১১০ জন শ্রমিকদের ফুসফুসে বিষাক্ত সংক্রমণের বিষয়ে জরিপ করা হয়েছে। যেখানে ৩৩ জনের ফুসফুসে ভয়াবহ মাত্রায় বিষাক্ত সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এসব শ্রমিকদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বাকিরা দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন।
অন্যদিকে জাহাজভাঙা শ্রমিকদের ওপর ২০১৯ সালে পরিচালিত এক জরিপে বলা হয়েছে, এই খাতে আনুমানিক ১৩ শতাংশ শ্রমিক শিশু। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, অবৈধভাবে রাতে কাজ করানো হয় অনেক শিশুকেই ফলে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ শতাংশে।
বাংলাদেশের শিপ ব্রেক ইয়ার্ডগুলোতে ‘বিচিং বা সৈকতায়ন’ নামক একটি পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। যেখানে কোনো ডক বা নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার না করে জাহাজগুলোকে জোয়ারের সময় সাগর তীরে আনা হয় এবং সেখানেই ভাঙার পুরো কাজ করা হয়। এ সময় কাজের ফলে সৃষ্ট বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি বালু ও সমুদ্রে মিশে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক পুরোনো জিনিসপত্র স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়, যা আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
নিয়ম অনুসারে, যেসব জাহাজ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা ব্যবহার করে থাকে সেগুলো মালিক পক্ষ বাতিল করতে চাইলে কেবল ইইউ অনুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠানেই ভাঙা যায়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না।
Leave a Reply