চট্টগ্রামে পরীর পাহাড় খ্যাত কোর্ট বিল্ডিং এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে জেলা আইনজীবী সমিতি ও জেলা প্রশাসক। আইনজীবীদের জন্য চেম্বার ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে দুপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় এটির বিস্ফোরণ ঘটেতে পারে বলে সংশিষ্টদের আশংকা।
সূত্র জানায় সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় আইনজীবী সমিতির নির্ধারিত স্থানে চেম্বার ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি। এতে বাদসাধেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। তিনি আদালত এলাকায় আইনজীবী চেম্বার ভবন নির্মাণের উদ্যোগের খবর পেয়ে ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। বিজ্ঞপ্তিতে কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করলে কঠোর আইন প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। এ নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের এমন বিজ্ঞপ্তি প্রচারের জেরে ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীগণ। তাদের মতে, জেলা আইনজীবী সমিতির নির্ধারিত স্থানে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার পর জেলা প্রশাসকের এমন বিজ্ঞপ্তি প্রচার উস্কানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও বাড়াবাড়ি হিসেবে দেখছে আইনজীবী সমিতি। যে কোনো মূল্যে ভবন নির্মাণ করতে বদ্ধপরিকর বলে জানান আইনজীবী নেতারা। জেলা প্রশাসকের এ ধরনের বাড়াবাড়ি কোনোভাবেই মেনে নিতে নারাজ আইনজীবী নেতারা।
এদিকে পত্রিকায় সতর্ককীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রচারের পর আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনার খবরে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও সশস্ত্র আনসার মোতায়ন করেছে প্রশাসন। রীতিমতো পুলিশ পাহারায় অফিস করছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দীন বলেন, জেলা আইনজীবী সমিতি আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির নির্ধারিত স্থানে চেম্বার ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন, যা মোটেই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত কিছুদিন আগে স্থানীয় এক দৈনিক পত্রিকায় আইনজীবী সমিতির একটি টেন্ডার আহ্বান আমার নজরে আসে। এতে দেখলাম কোর্ট হিল এলাকায় ভবন নির্মাণ করা হবে। যেহেতু পাহাড়ি শ্রেণির এই এলাকাটিকে সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ অধিক ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে, তাই আগে থেকে সতর্কীকরণ গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছি, যাতে কেউ এ এলাকায় কোনো ধরনের অবৈধ স্থাপনা না করে। এতে কোনো পক্ষ ক্ষুব্ধ হলে আমার বলার কিছুই নেই।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জেলা আইনজীবী সমিতি সাধারণ সভা আহ্বান করেছে।
Leave a Reply